সুইডেনে প্রকাশ্যে কোরআন পোড়ানো সেই ব্যক্তিকে টিকটকে লাইভ করার সময় গুলি করে হত্যা।
সুইডেনে প্রকাশ্যে পবিত্র কোরআনের কপি পুড়িয়ে আলোচনায় আসা সালওয়ান মোমিকাকে বুধবার (২৯ জানুয়ারি) রাতে স্টকহোমের নিকটবর্তী সোদেরতালিয়ে শহরে তার নিজ অ্যাপার্টমেন্টে টিকটকে লাইভ স্ট্রিমিং করা অবস্থায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
![]() |
প্রকাশ্যে কোরআন পোড়ানো সেই ব্যক্তিকে টিকটকে লাইভ করার সময় সুইডেনে গুলি করে হত্যা করা হয় |
সুইডিশ মিডিয়া বলছে, মোমিকা যখন গুলিবিদ্ধ হয়, তখন সে টিকটকে লাইভ স্ট্রিমিং করছিল। গণমাধ্যমের তথ্য মতে, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে টিকটকের সেই লাইভটি বন্ধ করেছে। অর্থাৎ, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরও মোমিকার টিকটক থেকে লাইভ চলছিল।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সুইডেনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম এসভিটির বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে বার্তা সংস্থা আনাদোলু।
স্টকহোম পুলিশের একজন মুখপাত্র বলেছেন, প্রায় ৪০ বছর বয়সি এক ব্যক্তিকে একটি অ্যাপার্টমেন্টে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায় এবং তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এরপর, পুলিশ নিশ্চিত করে যে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে এবং তারা হত্যার তদন্ত শুরু করেছে। ডেনমার্কের পুলিশকেও হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে বলে জানানো হয় প্রতিবেদনে। তবে নিহত ব্যক্তি মোমিকা কি না, তা সরাসরি বা তার নাম উল্লেখ করেনি পুলিশ। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মোমিকা ২০১৮ সালে ইরাক থেকে সুইডেনে অভিবাসী হয়ে আসেন এবং ২০২১ সালে তিন বছরের জন্য বসবাসের অনুমতি পান। খ্রিস্টান থেকে নাস্তিক হওয়া মোমিকা নিজেকে একজন ‘উদার, নাস্তিক, সমালোচক এবং চিন্তাবিদ’ হিসেবে পরিচয় দিতেন।
মোমিকা ২০২৩ সালে স্টকহোমের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে কোরআন পোড়ানোর মতো ঘৃণ্য ঘটনা ঘটান, যা মুসলিম বিশ্বে ব্যাপক ক্ষোভ ও তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছিল। তার বিরুদ্ধে ‘জাতিগত বিদ্বেষ উসকে দেওয়া’র অভিযোগে আদালতে মামলা চলমান ছিল, এবং বৃহস্পতিবার ওই মামলার রায় ঘোষণার কথা ছিল।
তবে তার মৃত্যুর কারণে মামলার রায় ঘোষণা স্থগিত করা হয়েছে।
সুইডেনের অসলো ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের এ সংক্রান্ত এক রায়ের নথি অনুসারে, মোমিকাকে গত বছরের ২৮ মার্চ গ্রেফতার করা হয়।
সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহ সেসময় জানায়, ৩০ মার্চ (২০২৪ সালের) শুনানির পর মোমিকাকে চার সপ্তাহের জন্য আটক রাখার সিদ্ধান্ত নেন আদালত। ইউরোপীয় ইউনিয়ন আইন মেনে নরওয়েজিয়ান ডিরেক্টরেট অব ইমিগ্রেশন (ইউডিআই) তাকে সুইডেনে ফেরত পাঠানোর অপেক্ষায় রয়েছে বলেও তখন জানানো হয়।
উল্লেখ্য, সুইডেনে একাধিকবার পবিত্র কোরআন পোড়ানোর ঘটনা ঘটানো ইরাকের নাগরিক মোমিকাকে এর আগে নরওয়েতে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে বলে খবর প্রকাশ করেছিল আন্তর্জাতিক কিছু গণমাধ্যম। যদিও পরে এর সত্যতা নিশ্চিত করা যায়নি।
এবার সুইডেনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম এসভিটি ব্যাপক সমালোচিত ওই ব্যক্তির নিহতের খবর নিশ্চিত করলো।