সিলেটের স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশন দিয়ে পণ্য যাচ্ছেনা ভারতে, দেশী পণ্য রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা
বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞায় সিলেটের স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশন দিয়ে পণ্য যাচ্ছেনা ভারতে।স্থলবন্দরগুলো দিয়ে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া তৈরি পোশাক ও খাদ্যসামগ্রীর মতো পণ্যের ওপর ভারতের নিষেধাজ্ঞার প্রভাব সিলেটের স্থলবন্দরগুলোতে খুব একটা পড়বেনা বলে দাবি করছেন সংশ্লিষ্টরা।
![]() |
| সিলেটের স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশন দিয়ে পণ্য যাচ্ছেনা ভারতে |
কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট এর কমিশনার মো: তাহসিনুর রহমান মনে করেন তামাবিল স্থল বন্দরে এর প্রভাব পড়বেনা। কিছুটা শেওলা স্থল বন্দরসহ দু-একটি শুল্ক স্টেশনে পড়তে পারে। কিছু প্রক্রিয়াজাত খাবার ও প্লাস্টিক পণ্য এসব স্টেশন দিয়ে রপ্তানি হয়ে থাকে। তবে অন্য স্থলবন্দরগুলোর তুলনায় তা খুব বেশি নয়।
ব্যবসায়ী নেতারাও বলছেন, এই নিষেধাজ্ঞা উল্টো হয়তো রপ্তানির বিকল্প পথ খুলে দিতে পারে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তৈরি পোশাক, পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাবার (পণ্য, স্ন্যাকস, চিপস ও কনফেকশনারি), প্লাস্টিক ও পিভিসি সামগ্রী, রং, কেমিক্যাল, তুলা, সুতা ও কাঠের আসবাবপত্র সিলেট বিভাগের তামাবিল ও শেওলা স্থলবন্দর, চাতলাপুর, জুড়ি শুল্ক স্টেশন দিয়ে রপ্তানি হয়ে থাকে। তবে ভারতের ডিজিএফটি থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে যেসব পণ্যের কথা বলা হয়েছে, এরমধ্যে কিছু বেকারী পণ্য, প্লাস্টিক পণ্য ছাড়া অন্য কিছু রপ্তানি হয়না। যা রপ্তানি হয়, তা খুব অল্প।
সিলেট কাস্টমস সূত্র জানায়, গত এপ্রিল মাসে সিলেটের দুটি স্থলবন্দর ও দুটি শুল্ক স্টেশন দিয়ে খাদ্যসামগ্রী, প্লাস্টিক, উডেন ফার্নিচার, পিভিসি ও কটনজুট ওয়েস্ট রপ্তানি হয়েছে। এরমধ্যে শেওলা স্থলবন্দর দিয়ে খাদ্যসামগ্রী ১৯৯৬.৫ টন, চাতলাপুর দিয়ে ৭৩ টনসহ সর্বমোট ২ হাজার ৭০ টন রপ্তানি হয়। প্লাস্টিক পণ্য শেওলা দিয়ে ৩২৫ টন, চাতলাপুর দিয়ে ৩৭ টন, জুড়ি শুল্ক স্টেশন দিয়ে ৬.৫ টন ও তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে ২৮ টনসহ সর্বমোট ৩৯৬.৫ টন পণ্য রপ্তানি হয়। এছাড়া চাতলাপুর, জুড়ি ও তামাবিল দিয়ে ৪০.৫ টন পিভিসি পণ্য রপ্তানি হয়। শুধু শেওলা দিয়ে ৬.৫ টন ফার্নিচার এবং জুড়ি দিয়ে ৮ টন কটন জুট ওয়েস্ট রপ্তানি হয়।
তামাবিল স্থলবন্দরের কাস্টমস এর সহকারি কমিশনার কর্মকর্তা মো: ইনজামাম উল হক বলেন, এই বন্দর মূলত পাথর আমদানীর জন্য বিখ্যাত। কিছু পণ্য ভারতে যায়, তবে পরিমানে কম। ভারতের নিষেধাজ্ঞার প্রভাব বুঝতে হলে কিছুটা সময় যেতে হবে। শেওলা স্থলবন্দর কাস্টমস এর সহকারি কমিশনার বিকাশ সরকার বলেন, গত শনিবারও কিছু পণ্য রপ্তানি হয়েছে। তবে রোববার কোন পণ্য যায়নি। কি কারণে যায়নি বিষয়টি এখনো বুঝে উঠা হয়নি।
তিনি বলেন, এই বন্দর দিয়ে প্রাণ আরএফএল এর কিছু পিভিসি পাইপ, প্লাস্টিকের দরজা এ জাতীয় পণ্য ভারতে যায়। এছাড়া ফুলকলির টোস্ট, জুসসহ কিছু পণ্যও এই বন্দর দিয়ে রপ্তানি হয়ে থাকে। গতকাল রোববার ৩ গাড়ি পিভিসি পাইপ এর গাড়ি আটকা ছিল। এ ব্যাপারে ফুলকলি ফুড প্রোডাক্টস এর সিলেটের ডিজিএম মো: জসিম উদ্দিন খন্দকার বলেন গতকাল শনিবারই তাদের সর্বশেষ পণ্য ভারতে গিয়েছে। তবে শনিবারই সেখানকার ব্যবসায়ীরা জানিয়ে দিয়েছে তাদের দেশের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, যাতে পণ্য পাঠানো না হয়। কারণ পণ্য গ্রহণে জটিলতা হবে।
কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট এর কমিশনার মো: তাহসিনুর রহমান বলেন, তামাবিল স্থল বন্দরে এর প্রভাব পড়বেনা। কিছুটা শেওলা স্থল বন্দরে পড়তে পারে। তবুও এই প্রভাব বুঝতে হলে কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হবে।
তথ্যসূত্র: নূর আহমদ, সিলেটের ডাক, ১৯/০৫/২৫ইং