৫০০ বছর আগে ১৫ বছর বয়সী এই কিশোরীকে বলি দিয়েছিল তারই সম্প্রদায়ের লোক!

মাউণ্ট আম্পাটো পর্বতচূড়ায় অভিযান এর সময় জুয়ানিটা বা আম্পাটো আইস মেইডেন নামে পরিচিত মমিটির সন্ধান পান যা ৫০০ বছর ধরে বরফাচ্ছাদিত ছিলো। এই আইস মেইডেন কে কিন্তু যথারীতিভাবে মমি বানানো হয় নি বরং বছরের পর বছর বরফে আচ্ছাদিত থাকায় প্রাকৃতিক ভাবে মমি তে রূপান্তরিত হয়েছে। তবুও আবহাওয়াজনিত তাপ, চাপ এবং সূর্যালোকের প্রভাবে আইস মেইডেন এর মুখের গঠন বিকৃত হয়ে গিয়েছিল।

১৫ বছর বয়সে বলি দিয়েছিল তারই সম্প্রদায়ের লোক;
ছবি: ন্যাশনাল জিও গ্রাফিক

সুইডিশ প্রত্নতত্ত্ববিদ ও ভাস্কর অস্কার নিলসন ৫ বছরের প্রচেষ্টায় আইস মেইডেনের একটি ত্রিমাত্রিক মুখচ্ছবি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন।

তিনি মূলত দুটি ধাপে এ কাজটি করেছেন। প্রথমে তিনি আইস মেইডেনের মুখের অবয়ব নিয়ে গবেষণা করেছেন। আইস মেইডেনের মুখের টিস্যুর গভীরতা, হাড়ের পরিমাপ সম্পর্কে ধারণা এমনকি সিটি স্ক্যান এর মাধ্যমে মৃত্যুর পূর্বের খাদ্যাভ্যাস, ডায়েট এর বিশদ তথ্য সংগ্রহ করেছেন। এসকল তথ্যের সমন্বয়ে দ্বিতীয় ধাপ এ আইস মেইডেনের একটি ত্রিমাত্রিক মুখের প্রতিচ্ছবি তৈরি করেন যেখানে প্লাস্টিসিন ক্লে এর মাধ্যমে চোখ, নাক, চোয়ালের প্রত্যেকটি পেশি এবং মানুষের মুখের পরিপূর্ণ অবয়বের জন্য সূক্ষ্ম দড়ির মতো বহু টিস্যু ব্যবহার করা হয়েছে। এই পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে ১০ সপ্তাহ লেগেছে।

এই ভাস্কর্যটি ২০২৩ সালের নভেম্বরে "Capacocha: Following the Inca Gods" শিরোনামে পেরুর Musio Santuarios Andinos এ প্রদর্শিত হয়।

প্রত্নতত্ত্ববিদ দের অনুসন্ধান অনুযায়ী ১৪০০ শতকের মাঝামাঝি কোনো এক সময়ে প্রাচীন ইনকা সভ্যতায় শিশু এবং যুবতী নারীদের ইনকা দেবতাদের উদ্দেশ্যে বলি দেয়া হতো।  তাদের বিশ্বাস ছিলো এতে করে তারা প্রাকৃতিক দূর্যোগ থেকে রক্ষা পাবে এবং সাম্রাজ্য আরও বেশি শক্তিশালী হবে। এ আচার-অনুষ্ঠান টি ক্যাপকোচা নামে পরিচিত ছিল। মমি জুয়ানিটা/আইস মেইডেন ও ছিলো ক্যাপকোচা এর স্বীকার।

আইস মেইডেনের ফরেনসিক বিশ্লেষণ থেকে মৃত্যুর কয়েক সপ্তাহ পূর্বের খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন গবেষকদল। এসময় তাকে অ্যালকোহল জাতীয় খাবার যেমন,  কোকা লিভস,আয়াহুয়াস্কা লিভস এসব খাওয়ানো হয়েছিল। গবেষকদের মতে এটি একটি সম্মোহনকারী প্রক্রিয়া ছিল যাতে করে মৃত্যুর সময় পর্যন্ত তারা বলিদানের জন্য নির্বাচিত হওয়ার জন্য গর্ববোধ করে এবং হাসিমুখে স্বেচ্ছামৃত্যু মেনে নেয়। আইস মেইডেন এর মৃত্যু হয়েছিল মাথার পেছনে খুলিতে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে।

তথ্যসূত্র

ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক https://www.nationalgeographic.com/premium/article/ice-maiden-ampato-inca-mummy-facial-reconstruction?cmpid=org=ngp::mc=social::src=facebook::cmp=editorial::add=fbp20240503history-and-culture-frozenincagirlpremiumhedcard&linkId=417915508&fbclid=IwZXh0bgNhZW0CMTEAAR0QAwKx8ySkfimOSIXPwwa3kpgUlR0hm1_AHa4Kd9kUPRoJSNcc-bPYlYg_aem_AfJtFEMBlGR2uA28zjYRKwwwYWznBF2ny9Wa390j8xRmMDsiG4VlXXbN8njU4gBTRw0tTdj1n2PMWv2ZruOlyl-U

Next Post Previous Post
📢 আপনার ব্র্যান্ড/প্রতিষ্ঠানের কথা জানুক হাজারো অনলাইন পাঠক আজই বিজ্ঞাপন দিন 🛍️